নড়াইল প্রতিনিধি:
ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিতে বাধ্য হয়েছেন নড়াইলের এক নারী। ওই নারী এক ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করেন, তাকে চার ঘণ্টা আটকে রেখে এ ধরনের বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়।
সম্প্রীতির স্থানেও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ:
নড়াইলের লোহাগড়ার নলদী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ সনাতন ধর্মাবলম্বী। এখানে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। তবে সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য উষা রানী রায়ের একটি বক্তব্য প্রচারিত হলে তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
বিতর্কিত বক্তব্য:
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে উষা রানী দাবি করেছিলেন, "মাগুরার দিকে দোকান খুলতে পারছি না, লুটপাট করে নিয়ে গেছে।"
পরিবারের বক্তব্য:
উষা রানীর পরিবার জানায়, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গত ৭ ডিসেম্বর তিনি ভারতে যান। সেখানেই তাকে চার ঘণ্টা আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের ভুয়া তথ্য দিতে বাধ্য করা হয়।
উষা রানীর বক্তব্য:
এক ভিডিও বার্তায় উষা রানী বলেন, "চারিদিক থেকে ঘিরে সব কিছু বলানো হয়েছে। আমাকে চার ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছিল। ভয়ে পড়ে সব কিছু বলেছিলাম।"
স্বামী সুবাস রায়ের প্রতিক্রিয়া:
উষা রানীর স্বামী সুবাস রায় বলেন, "ওই সাক্ষাৎকারে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখানে হিন্দু-মুসলমান সবাই সম্মানের সঙ্গে একত্রে বসবাস করি।"
স্থানীয়দের বক্তব্য:
সনাতন ধর্মের এক স্থানীয় নারী বলেন, "আমরা খুব শান্তিতে আছি। সুন্দর পরিবেশে পূজা-অর্চনা করছি।"
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
নলদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, "আমি ৩০ বছর ধরে চেয়ারম্যান। কারও বাড়ি বা সম্পত্তির উপর নির্যাতনের কোনো প্রমাণ নেই।"
নলদী পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মোরসালিন জানান, "আমরা চেয়ারম্যানসহ ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে অবস্থান করি, যাতে আইনশৃঙ্খলা ঠিক থাকে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।"
এ ঘটনা থেকে স্থানীয়দের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা একত্রে কাজ করে সম্প্রীতি রক্ষা করছেন।
Post a Comment