বাগাতিপাড়ায় চিরকুটে মোবাইল নম্বর দিয়ে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি। ছবি : কালের কণ্ঠ
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বৈদ্যুতিক মিটার চুরির একটি অভিনব ঘটনা ঘটেছে। একটি চোর চক্র মিটার চুরি করে মিটার বক্সে মোবাইল নম্বরসহ একটি চিরকুট রেখে যাচ্ছে। চিরকুটে বিকাশ বা নগদে টাকা পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগীরা সেই নম্বরে টাকা পাঠিয়ে চুরি যাওয়া মিটার ফেরত নিচ্ছেন।
জানা গেছে, চোর চক্রের সদস্যরা গভীর রাতে মিটার চুরি করে এবং চুরি করা স্থানের পাশে পলিথিনে মুড়িয়ে মোবাইল নম্বর লেখা চিরকুট রেখে যায়।
চিরকুটে লেখা থাকে, "চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন ০১৮৫.....।" সেই নম্বরে কল করলে ৭-১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। ভুক্তভোগীদের নির্দেশ দেওয়া হয় নগদ বা বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে। পাশাপাশি জানানো হয়, টাকা পাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে মিটার ফেরত দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতের কোনো এক সময় নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়নের লোকমানপুর বাজারে কাঠমিল, রাইসমিল ও ওয়ার্কশপের ৪টি বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়েছে।
ভুক্তভোগী আসলাম উদ্দিন বলেন, "আমার মিটার এই প্রথম চুরি হলো। মঙ্গলবার রাতে মিল বন্ধ করে বাড়ি গিয়েছিলাম। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মিলে এসে দেখি মিটার নেই।"
তিনি আরও জানান, পরে জানতে পারেন বাজারের আরও তিনজনের মিটারও চুরি হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে মিটারের নিচে পলিথিনে মোড়ানো একটি চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটে লেখা ছিল, "চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন ০১৮৫..... নম্বরে।"
আসলাম উদ্দিন বলেন, "নম্বরে কল দিলে তারা নগদের মাধ্যমে ৭ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। কিন্তু আমি গরিব মানুষ, এত টাকা কোথা থেকে দেব বুঝতে পারছি না।
আরেক ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, "সকালে এসে দেখি মিলের মিটার নেই। পরে চিরকুটে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করলে তারা ৭ হাজার টাকা দাবি করে। অনেক দর-কষাকষির পর সাড়ে ৫ হাজার টাকা নগদের মাধ্যমে পাঠাই। তারা জানায়, ১৫ মিনিট পর মিটার পাওয়া যাবে। সত্যিই ১৫ মিনিট পর জানায়, পাশের বাড়ির খড়ির ঘরে মিটার রাখা আছে। সেখানে গিয়ে দেখি, মিটার ঠিকই আছে।"
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে একদল চোর এই চক্র পরিচালনা করছে। তারা দ্রুত এ ঘটনায় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বাগাতিপাড়া সাব জোনাল অফিসের দায়িত্বে থাকা এজিএম (ওএন্ডএম) মঞ্জুর রহমান বলেন, "বিষয়টি যেহেতু চুরির, তাই এটি থানার অধীনে। ভুক্তভোগীরা থানায় গিয়ে এফআইআর করে সেই কপি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা দিলে পরের দিনই নতুন মিটার সংযোগ দেওয়া হবে।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি অমিনুল হক বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, তবে ভুক্তভোগী কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Post a Comment